স্মার্টফোন স্লো হয়ে যাওয়ার প্রকৃত কারণ এবং সমাধানের উপায়

বর্তমানে স্মার্টফোন সবাই ব্যবহার করে। বিশেষত যারা স্মার্টফোনের মাধ্যমে অফিসিয়াল, বিজনেস, স্টাডিসহ বিভিন্ন কাজ করে থাকেন তাদের জন্য এর বিকল্প কিছুই নেই। কিন্তু বিপাকে পড়তে হয় তখনি, যখন স্মার্টফোনটি হ্যাং করে বা স্লো হয়ে যায়। স্মার্টফোনে যতগুলো সমস্যা হয় তার মধ্যে স্লো হয়ে যাওয়া একটি অন্যতম সমস্যা। এই সমস্যার জন্য দায়ী আমরা নিজেরাই।
স্মার্টফোন স্লো হয়ে যাওয়ার প্রকৃত কারণ এবং সমাধানের উপায়

কারণ আমরা অনেকেই স্মার্টফোন স্লো হওয়ার কারণগুলো জানি না, জানি না স্মার্টফোন স্লো হলে তা কীভাবে ফাস্ট করতে হয়। অথচ স্মার্টফোন ফাস্ট করার টিপসগুলো জানা থাকলে এবং একটু সচেতন থাকলে একটি ফোনই আমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবহার করতে পারবো। চলুন তাহলে  শুরু করা যাক, স্মার্টফোন স্লো হওয়ার প্রকৃত কারণ এবং ফাস্ট করার কার্যকরী উপায়গূলো সম্পর্কে –

স্মার্টফোন স্লো হওয়ার কারণ –

একটি নতুন স্মার্টফোন কেনার পর ফোনের যে স্পিড থাকে তা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। তবে আপনি চাইলেই একটু সচেতনতা ও যত্নের সাথে ফোনটি ব্যবহার করলেই একটি নতুন স্মার্টফোনের যে স্পিড থাকে তা দীর্ঘদিন ধরে রাখা সম্ভব।

  • একটি স্মার্টফোনের প্রধান চালিকা শক্তি হলো প্রসেসর (Processor)। মূলত ফোন চালানোর সময় প্রসেসরের উপর অত্যাধিক চাপ পড়লে স্লো হয়ে যায় ফোন। তার পাশাপাশি ফোনের ইউ আই এবং রেম ম্যানেজমেন্টও সমস্যা হয়। এটাই হলো মোবাইল ফোন স্লো হওয়ার প্রধান কারণ।
  • এছাড়াও ফোনের অপারেটিং সিস্টেম ও এপস সমূহ নিয়মিত আপডেট না করলে, অপ্রয়োজনীয় এপস দিয়ে ফোনের স্টোরেজ ভর্তি রাখলে, সারারাত চার্জে রেখে ব্যাটারি ডাউন করে ফেলা সহ আরো বিভিন্ন কারণে ফোন স্লো হয়।
  • বাজারের নিম্ন মানের এবং সস্তা এসডি কার্ড ফোনে ব্যবহার করা।
  • ফোনে টোটাল ইন্সটল এর মধ্যে ২০% ফাঁকা না রাখা।

স্লো স্মার্টফোন ফাস্ট করার কার্যকরী উপায় –

১/ ফোনের মেমোরি স্টোরেজ ফুল হলে স্লো হয়
স্মার্টফোনে আমরা প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে ছবি অডিও ভিডিও রাখি ও অ্যাপ ইন্সটল করে রাখি, এতে করে আমাদের মোবাইলের মেমোরিটি অনেক সময় ফুল করে ফেলি এই মেমোরি স্টোর ফুল হওয়ার কারনে মোবাইলটি স্লো হয়ে থাকে। আমরা অবশ্যই মোবাইলের মেমোরি স্টোরেজ ২০% এর বেশি খালি রাখার চেষ্টা করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় ফাইল অ্যাপস ডিলেট করে দিতে হবে।

২/ অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস আনইন্সটল করে দিন
আমরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রয়োজনে আমাদের ফোনে অনেক ধরনের অ্যাপস ইন্সটল করি। ওই অ্যাপসগুলো তাৎক্ষণিক ব্যবহারের পর পরবর্তীতে আর ব্যবহার করা হয় না। কিন্তু তারপরও অলসতার কারণে অ্যাপসগুলো দিনের পর দিন আমাদের RAM এর অনেকটা জায়গা দখল করে বসে থাকে। আর অতিরিক্ত অ্যাপস স্মার্টফোন স্লো করে দেয়। তাই যতটা সম্ভব হয় অ্যাপস কম রাখা।

৩/ স্মার্টফোনের সকল এপস আপডেট রাখা
আমাদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষের ফোনে একবার যে এপসটি ইন্সটল করা থাকে সেটাই ব্যবহার করতে থাকি। আমরা অনেকেই নিয়মিত অ্যাপস আপডেট করি না। এতে একটি এপস অনেকদিন ব্যবহার করতে করতে এটি স্লো কাজ করতে থাকে। অথচ ডেভেলপাররা প্রতিটি এপস কয়েকদিন পর পর নতুন নতুন ফিচার এড সহ আরো আপগ্রেড করে আপডেট করে থাকেন। তাই আপনি আপনার স্মার্টফোনের এপস গুলো নিয়মিত আপডেট করুন। ফলে আপনার এপস ফাস্ট কাজ করবে এবং সহজে হ্যাং মারবে না বা ক্রাস করবে না।

৪/ অতিরিক্ত চার্জ দিবেন না
আমরা অনেকেই রাত পর্যন্ত ফোন ব্যবহার করে ঘুমানোর আগে চার্জে লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। ফলে সারারাত ফোন চার্জে লাগানো থাকে। এতে করে ব্যাটারি ওভারলোড হয়ে গরম হয়ে যাওয়ার মত সমস্যা হতে পারে৷ ফলে ব্যাটারি তো ডাউন হয়ই সাথে ব্যাটারি গরম হবার ফলে মাদারবোর্ডেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। তার ফলাফল হয় স্মার্টফোন স্লো হয়ে যাওয়া। অনেক সময় মাদারবোর্ডে বেশি সমস্যা দেখা দিলে ফোন পুরোপুরি ও অব্যবহারযোগ্য হয়ে পড়ে।

৫/ আপনার স্মার্টফোনকে বিরতি দিন
আমরা যখন স্মার্টফোন দিয়ে গেম খেলি, ভিডিও দেখি এবং নেট অন করে ব্রাউজিং করি তখন কিন্তু স্মার্টফোন গরম হয়ে যায়। যখন দেখবেন ফোন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি গরম হচ্ছে তখন একটি নির্দিষ্ট সময় ব্যবধানে বিরতি দিন। ‌ এতে কাজ করা সক্ষমতা ঠিক থাকবে ফোনের।

৬/ রিস্টার্ট দেওয়া
আপনার ফোনটি যদি অতিরিক্ত স্লো হয়ে যায় তাহলে আপনি একবার রিস্টার্ট করে নিতে পারেন। এছাড়াও ২/৩ দিন পর পর আপনার ফোনটি রিস্টার্ট করে নিতে পারেন। এটিও স্মার্টফোনকে ফাস্ট করতে ভূমিকা পালন করে। এখন থেকে খেয়াল করে কিন্তু রিস্টার্ট দিবেন ফোনটি।

Post a Comment

Previous Post Next Post