মোবাইল ফোনের আসল ও নকল চার্জার চেনার সহজ উপায়-

বর্তমানে আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে স্মার্টফোন। স্মার্টফোন ছাড়া এখন এক মুহূর্তও চলা অসম্ভব। কারণ স্মার্টফোনের সাহায্যে অফিসের কাজ থেকে শুরু করে দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজ করা হয়। এই কারনে স্মার্টফোনে সবসময় চার্জ থাকা প্রয়োজন। স্মার্টফোনে চার্জ দেওয়ার জন্য একটি চার্জার, স্মার্টফোনের একটি অপরিহার্য অংশ। এটি ছাড়া ফোন ব্যবহার করা সম্ভব নয়। 
মোবাইল ফোনের আসল ও নকল চার্জার চেনার সহজ উপায়
ফোন ভালো রাখতে আসল চার্জার ব্যবহার করা খুবই জরুরি। তবে অনেক সময় আসল চার্জার নষ্ট হয়ে যায় বা হারিয়ে যায়। সেক্ষেত্রে বাজার থেকে চার্জার কিনে নিই আমরা। কিন্তু সেটি আসল নাকি নকল সেটি আমরা যাচাই করি না। আজকাল অ্যাপলের মতো আরও অনেক কোম্পানি তাদের স্মার্টফোনের সঙ্গে চার্জার দিচ্ছে না। এমন অবস্থায় গ্রাহকদের একটি বড় প্রশ্ন এই যে, স্মার্টফোনের অরিজিনাল চার্জার কোথা থেকে ক্রয় করবেন তাঁরা। কারণ বর্তমান বাজারে অনেক ধরনের চার্জার পাওয়া যায়। জানলে অবাক হবেন, শত শত চার্জারের ভিড়ে কার্যকর চার্জারের সংখ্যা খুবই নগণ্য। পথেঘাটে, এমনকি অভিজাত বিপণিবিতানেও রয়েছে নকল চার্জারের বিশাল বাজার। বিক্রিও হচ্ছে দেদার। এসব চার্জার ব্যবহার করে অনেক ব্যবহারকারীই ঝুঁকির মধ্যে আছেন। নকল চার্জারের সমস্যা বর্তমানে বেড়ে চলেছে, কোম্পানির নাম করে অনেক ছোট খাট সংস্থা নকল চার্জার তৈরি করেন। ফলে কোম্পানির দামি অ্যান্ড্রয়েডে ব্যবহার করে মোবাইলের যেমন বারোটা বাজছে তেমনি কয়েকদিনের মধ্যে লোড টানতে না পেরে মোবাইলের চার্জারটিরও বারোটা বাজছে। শুধু তাই নয় বিদ্যুতের শক লাগার ঘটনাও ঘটে চলেছে।
মোবাইল ফোনের আসল ও নকল চার্জার চেনার সহজ উপায়
সাম্প্রতিক, এই বিষয়ে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। চারশ নকল চার্জারের মধ্যে মাত্র তিনটি চার্জারে বৈদ্যুতিক শক ঠেকাতে যথেষ্ট প্রতিরোধোক ব্যবহার করা হয়। যার ফলে অনেকে মারাত্মক ঝুঁকিতে আছেন বলে সতর্ক করেছেন তদন্তকারীরা। বর্তমানে বিভিন্ন অনলাইন বিজনেস সংস্থাগুলির মধ্যে নকল চার্জার বিক্রির প্রবনতা বেড়েছে।

আসল এবং নকল চার্জার চেনার আগে জানা দরকার কোন কোম্পানির কেমন চার্জার হয়?

শাওমি এমআই
শাওমির নকল চার্জার চিনতে হলে কেবলের দৈর্ঘ্য মেপে নিন। যদি কেবলটি লম্বায় ১২০ সেন্টিমিটারের কম হয় বা অ্যাডাপ্টর বড় হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে চার্জারটি নকল।

আইফোন
বাজারে সবচেয়ে বেশি ভুয়া চার্জার আইফোনের। এগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়, যাতে আসল আইফোন চার্জারের সঙ্গে এর পার্থক্য বোঝা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আসল চার্জারে ‘Designed by Apple in California’ লেখা থাকবে। ভুয়া চার্জারের সঙ্গে অ্যাপলের লোগোতে সহজেই পার্থক্য ধরতে পারবেন। ভুয়া চার্জারে বসানো লোগোটি কখনো আসলটির মতো হবে না। অ্যাপল লোগোটি ভুয়া চার্জারে গাঢ় কালো রঙের দেখাবে। তাই আইফোনের চার্জার কেনার সময় লোগো খেয়াল করুন।

স্যামসাং
বাজারে স্যামসাং ফোনের উপযোগী বলে তৈরি করা নানা ভুয়া চার্জার পাবেন। এ ধরনের চার্জার চিনতে এর ওপরের লেখাগুলো পড়ুন। স্যামসাংয়ের আসল ও নকল চার্জারের পার্থক্য খুঁজে বের করা বেশ কঠিন। চার্জারের ওপর প্রিন্ট করা লেখা দেখে বুঝতে হবে। যদি চার্জারের ওপর ‘A+’ ও ‘মেড ইন চায়না’ লেখা থাকে, তবে সেটি ভুয়া হওয়ার আশঙ্কা বেশি।

ওয়ানপ্লাস
ওয়ানপ্লাস ফোনের অরিজিনাল ড্যাশ চার্জার চেনা খুবই সহজ। যদি চার্জিং এর সময় চার্জারের আলো ব্লিঙ্ক না করে তবে তা নকল চার্জার। আসল চার্জারে ফোন চার্জিং এর সময় এই আলো ব্লিঙ্ক করে।

গুগল পিক্সেল
অন্যান্য সংস্থার মতো গুগল পিক্সেলেরও নকল চার্জার পাবেন বাজারে। তবে এর আসল নকল বুঝতে পারবেন খুব সহজেই। গুগল সব সময় পিক্সেল ফোনের সঙ্গে ফাস্ট চার্জার সরবরাহ করে থাকে। যদি পিক্সেল ফোনটি চার্জ হতে অনেক সময় নেয়, তাহলে বুঝতে হবে চার্জারটি নকল।

হুয়াওয়ে
বাজার হুয়াওয়ের নকল চার্জারও পাবেন। হুয়াওয়ের আসল ও নকল চার্জার চিনতে বারকোডের সাহায্য নিন। হুয়াওয়ে চার্জারের বারকোড তথ্যের সঙ্গে অ্যাডাপ্টরের বারকোড তথ্যের মিল পাওয়া গেলে বুঝতে হবে চার্জারটি আসল।

নকল চার্জার চেনার সঠিক উপায়। অর্থাত কীভাবে বুঝবেন চার্জারটি নকল?

প্লাগ পিন
নতুন চার্জার এনে প্লাগে সরাসরি প্রবেশ করাতে গিয়ে যদি খাপ না খায় তাহলে বুঝতে হবে সেটি নকল। কারণ নকল হলেই পিনগুলো ভুল বানানো হয়ে থাকে। পিন-এর ধার আর চার্জারের ধারের মধ্যে অন্তত ৯.৫ মিলিমিটার জায়গা থাকতে হবে। 

মার্কিং
চার্জারের মধ্যে উত্পাদনকারী সংস্থার নাম, লোগো বা ব্যাচ নাম্বার এবং ভালোভাবে সেই জায়গাটি পরখ করা দরকার। কারণ, একটু উল্টো হলেই বুঝতে হবে নকল।

চার্জার সকেট
চার্জার সকেট বা মাল্টিপ্লাগের প্লাগের ঢোকানোর পর যদি ঠিকভাবে খাপ না খায় ধরে নিতে হবে পিনগুলো ভুল আকারে বানানো। পিনের আর চার্জারের মধ্যে অন্তত ৯.৫ মিলিমিটার জায়গা থাকতে হবে। এমন না হলে ধরে নিতে হবে চার্জারটি নকল।

সতর্কতা ও নির্দেশনা
ইউজারদের নির্দেশনায় শর্ত আর ব্যবহারের নীতিমালা দেওয়া থাকতে হবে। নিরাপদে ব্যবহার করা দরকার।

চার্জার গরম হওয়া
নকল চার্জার দিয়ে দিনে ২-৩ বার চার্জ দিলেই খুব দ্রুত তা গরম হয়ে যায়। আসল চার্জারের ক্ষেত্রে দ্রুত গরম হয় না।

ইউএসবি কেবল
নকল চার্জারের চার্জিং পিন আসল চার্জারের ফিনের থেকে অনেক বড় হয়।

আসল চার্জার ক্রয়- 
যদি কারও শহরে আসল চার্জার পাওয়া না যায় তাহলে তিনি অনলাইন মোবাইল প্রোভাইডার কোম্পানি থেকে সেই কোম্পানির অরিজিনাল চার্জার ক্রয় করতে পারেন। এছাড়াও গ্রাহকরা নিজেদের শহরে উপস্থিত মোবাইল কোম্পানির আউটলেটে গিয়ে সেই কোম্পানির অরিজিনাল চার্জার ক্রয় করতে পারেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post