মোবাইল ফোন ভালো রাখার সেরা কার্যকরী কয়েকটি টিপস

বর্তমান সময়ে আমরা প্রত্যেকে মোবাইল ফোন ইউজ করি আর এটা আমাদের খুবই শখের একটা জিনিস। একই সাথে এটা খুবই জরুরি একটা পার্ট ও। আমাদের প্রতিটা কাজের সাথে বিভিন্নভাবে যুক্ত এই মোবাইল ফোন। এই মোবাইল ফোনকে বাদ দিয়ে একটি দিনও চলা অসম্ভব। আমরা সবাইই চাই আমাদের মোবাইল ফোন যেন দীর্ঘদিন আমাদের ভালো ভাবে সার্ভিস দেয়।  ভাবছেন সেটা কেমন করেই বা সম্ভব!
  • মোবাইল ফোন ভালো রাখার সেরা কার্যকরী কয়েকটি টিপস

মোবাইল ফোন ভালো রাখার ১০ টি টিপস

আপনি চাইলে আপনার ফোন থেকে দীর্ঘ সময়ের জন্য সেরা আউটপুট পেতে কিছু টিপস অনুসরণ করতে পারেন। আজকের এই আর্টিকেলে, আমি এমন 10 টি টিপসের কথা বলব, যা অনুসরণ করে আপনি সহজেই আপনার মোবাইল ফোনটিকে দীর্ঘ সময়ের জন্য ভাল অবস্থায় রাখতে পারেন। চলুন তাহলে শুরু করা যাক-

১/ একটি ভাল স্ক্রিন প্রটেক্টর এবং ফোন কেস ব্যবহার করা 
ফোনের স্কিন প্রটেশন নিয়ে যথেষ্ট সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন। কারন একসিডেনলি আপনার হাত থেকে ফোন পড়ে গেলে যদি স্ক্রিন প্রটেকশন না থাকে, তাহলে সরাসরি ডিস্প্লে নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই জন্য স্ক্রিন প্রটেকশন থাকা খুবই জরুরি। আবার এটা ও নানা প্রকার রয়েছে, আপনার উচিত হবে সবচেয়ে ভালো মানের স্ক্রিন প্রটেক্টর ইউজ করা।

একই সাথে ফোনের ব্যাকসাইডের জন্য ও একটা হাই কোয়ালিটি কেস ইউজ করা জরুরি। এটা আপনার ফোনের বডিতে কোন প্রকার স্ক্র্যাচ পড়া থেকে ফোনকে বাঁচায়। আবার অনেক সময় লো কোয়ালিটি ফোন কেস নিজেই ফোনের ব্যাকে স্ক্র্যাচ ফেলে দেয়, সেসব থেকে সতর্ক থাকতে হবে।

আরো পড়ুন:
২/ অতিরিক্ত গরম থেকে ফোন দূরে রাখুন
ওভারহিটিং আপনার ফোনের লাইফ দ্রুত নষ্ট রে ফেলতে পারে। ফোনে দীর্ঘ সময় গেম খেললে বা মোবাইল ডাটা দিয়ে মাল্টিটাস্টিং করলে ফোন গরম হয়ে থাকে। তাই যতটা সম্ভব এটাকে নরমাল আর ন্যাচারাল তাপমাত্রায় রাখতে হবে। তাপমাত্রা টা ঠিক রাখার জন্য মোবাইলটি কিছু সময়ের জন্য ব্যবহার না করা। এটা করতে পারলে আপনি আপনার ফোন থেকে সবচেয়ে বেশী সময় ভালো আউটপুট পাবেন।

৩/ ফোনে যথেষ্ট পরিমান স্পেস ফাঁকা রাখুন
ফোন মেমোরি এবং আপনার এস ডী কার্ড দুই জায়গাতেই আপনার উচিত হবে স্পেস খালি রাখা। সব সময় চেষ্টা করবেন আপনার টোটাল ফোন মেমোরি থেকে প্রায় ৫০% ফাঁকা রাখার। স্পেস খালি রাখলে স্টোরেজ খুব দ্রুত ডাটা রিড এবং রাইট করতে পারে, এর ফলে আপনার ইউজিং এক্সপেরিয়েন্স হয় বেটার।

তো এখন থেকে চেষ্টা করবেন অদরকারি লার্জ ফাইল গুলো ফোন থেকে সরিয়ে ফেলার। আর ফাইল স্টোরেজের জন্য এক্সটার্নাল মেমোরি, পেনড্রাইভ বা হার্ডডিস্ক ইউজ করতে পারেন।

৪/ ফোনটি সব সময় পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন
অবশ্যই ফোনকে ধুলাবালি থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন। এটা সবসময় সম্ভব নাও হতে পারে, তবে ফোন পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। আর তা না হলে নির্দিষ্ট সময় পর টিস্যু দিয়ে মুছে পরিষ্কার করতে পারেন। যদি ফোনটি পরিষ্কার থাকে তবে এটি ব্যবহার করা আনন্দদায়ক।

৫/ সঠিক নিয়ম মেনে ব্যাটারি চার্জ দিন
বর্তমানে অধিকাংশ স্মার্টফোনের ব্যাটারির নন রিমুভেবল হয়ে থাকে। আপনার ফোনের অন্যতম একটা গুরুত্বপুর্ন পার্ট হচ্ছে এই ব্যাটারি। কারন ব্যাটারির হেলথের উপরে অনেক কিছুই নির্ভর করে। কিছু টিপস ফলো করে আপনি আপনার ব্যাটারির হেলথে ভালো রাখতে পারেন।

জানা জরুরী: স্মার্টফোন কখনই পুরোপুরি চার্জ করবেন না। 100 শতাংশ পর্যন্ত মোবাইল চার্জ করার অভ্যাস ত্যাগ করুন এবং যখনই ফোনটি চার্জে রাখা অবস্থায় 90 শতাংশের কাছাকাছি থাকবে তখনই ফোন চার্জ করা বন্ধ করুন। একইভাবে, ফোনের ব্যাটারি 20 শতাংশের নিচে নামতে দেবেন না। যদি সম্ভব হয়, প্রায় 20 শতাংশ শেষ হওয়ার সাথে সাথে ফোনটি চার্জে দিন।

৬/ সব এপ আপডেটেড করা
আমাদের ফোনে যত এপস আছে, দরকারি, সব এপসকেই আপডেটেড রাখতে হবে। এটা আপনাকে ফাস্ট এবং স্মুথ ইউজিং এক্সপেরিয়েন্স প্রদান করবে। এবং একই সাথে এপ গুলো থাকবে সিকিউরড। আপনি ইউজ করতে পারবেন এপ গুলোর লেটেস্ট ফিচার গুলো।

আপনি প্রায়ই হয়তো আপনার গুগল প্লে স্টোরে এপ আপডেটের নটিফিক্যাশন দেখে থাকবেন, এখন থেকে এটা অবহেলা করবেন না।

৭/ অপ্রয়োজনীয় এপস ডাউনলোড করা থেকে বিরত থাকুন
অপ্রয়োজনীয় এপস প্রথমেই আপনার মেমোরিতে স্পেস নষ্ট করে। এটা আপনার ফোনকে স্লো করে ফেলতে পারে। আর কিছু কিছু আন-অফিসিয়াল এপের কারনে আপনার ফোন হ্যাকিং এর শিকার পর্যন্ত হতে পারে।

এইজন্য শুধু মাত্র অফিসিয়াল এবং খুবই দরকারি এপগুলোই ফোনে রাখুন, প্রয়োজন না হলে এসব এপস ডিলিট করে ফেলুন ফোন থেকে। আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন, যে আপনার ফোনে একটা চেঞ্জ আসছে এবং এটা আগে থেকে বেটার স্পীড দিচ্ছে।

৮/ ফোনের চার্জিং পোর্ট পরিষ্কার রাখা 
ফোনের চার্জিং পোর্ট খুবই সেনসিটিভ একটা পার্ট। আপনার সব সময় উচিত এটার যত্ন নেওয়া এবং এটাকে পরিষ্কার রাখা। না হলে এটা দ্রুত নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আর ফোনের চার্জিং পোর্ট নষ্ট হলে সেটা ফিক্স করা যথেষ্ট সমস্যার কাজ। আর চার্জিং পোর্টটি অবশ্যই নরম টিস্যু দিয়ে পরিষ্কার করবেন।

৯/ নিয়মিত রিস্টার্ট করা
আমরা অনেকেই ফোনকে মাসের পর মাস বিনা অন-অফ করে চালু করে রাখি। এটা মোটে ও ভালো ব্যাপার না। ফোনকে নিয়মিত রিস্টার্ট দেওয়া উচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতিদিন না হলেও ২-৩ দিন পর পর একবার ফোন রিস্টার্ট দেওয়া উচিত। তবে প্রতিদিন একবার করে রিস্টার্ট দিলেও হবে।

১০/ যত্ন সহকারে ফোন নাড়াচাড়া করা
ফোনকে যথেষ্ট যত্ন সহকারে হ্যান্ডেল করতে হবে। কারন এটা একটা শখের জিনিস। তবে আপনি ফোন যেভাবে ব্যবহার করেন সেভাবেই করেন। আপনি চাইলেই এটাকে এখানে ওখানে ছুড়ে ফেলে রাখতে পারবেন না। অনেকেই আছে, যারা ফোন সোফায় বা বেডে ছুড়ে ফেলেন, এটা খুবই বাজে অভ্যাস। কারন আপনি এভাবে ফোন রাখলে আপনার ফোনের ভিতরকার পার্টসে গন্ডগোল হতে পারে, যদি সেটা বেশী জোরে কোথাও গিয়ে পরে। আবার ওয়াশরুমে ও ফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকা উচিত।

শেষ কথা: উপরে যেগুলো নিয়ে আলোচনা করলাম এই টিপস গুলো সঠিকভাবে মেনে চললে, আপনি খুব ভালো ভাবে আপনার ফোন চালাতে পারবেন দীর্ঘ সময়। আর এসব টিপস ফলো করা মোটে ও কষ্টসাধ্য কিছু না। এসব খুবই সাধারণ এবং রেগুলার টিপস, যা আপনি চাইলেই ফলো করতে পারেন আর আপনার ফোনের লং একটা লাইফ এনসিউর করতে পারেন। তবে দেখা গেছে অধিকাংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী এই কাজগুলো করে না।

Post a Comment

Previous Post Next Post